শনিদেবের প্রকোপ থেকে বাচঁতে চান
শনিদেব কে (Shani Dev) জ্যোতিষশাস্ত্রে (Astrology) নয়টি গ্রহের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। শনিদেব ন্যায়বিচারের দেবতা এবং মানুষকে তাঁদের কর্মের ভিত্তিতে ফল দেন তিনি। শনির মহাদশার (Shani Mahadasha) কারণে দুর্দশা ভোগ করতে হয়। শনিদেবের প্রকোপ থেকে বাঁচতে চান? শনিদেবের নাম শোনা মাত্রই মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জাগতে শুরু করে। শনিদেব ভক্তদের ভাল কাজের শুভ ফল দেন। তবে যারা খারাপ কাজ করেন, তাঁদের শনিদেবের ক্রোধের সম্মুখীন হতে হয়।
![]() |
শনিদেব কে। Shani Dev প্রণাম মন্ত্র। শনির সাড়েসাতি |
শনির সাড়েসাতি কী কাকে বলেঃ
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, শনির সাড়ে সাতি দশা মানুষের জীবনে ভয়াবহ সমস্যার সৃষ্টি করে। শনি গ্রহ চন্দ্ররাশির দ্বাদশ, প্রথম ও দ্বিতীয় ঘর অতিক্রম করে সেই সময়কালকে শনির সাড়ে সাতি বলা হয়। রাশিচক্রে শনি প্রত্যেকটি রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগে আড়াই বছর। তিনটি রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগে মোট সাড়ে সাত বছর। আর এই সাড়ে সাত বছর সময় লাগে বলেই এই সময়টিকে শনির ‘সাড়ে সাতি’ বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ কুবের মন্ত্র
শনিদেবকে খুশি করতে ও প্রকোপ থেকে বাঁচতে সহজ উপায় কী কী?
শনিদেব ও বজরংবলীর পুরাণ আছে। এই যুদ্ধে বজরঙ্গবলী শনিদেবকে
পরাজিত করেছিলেন। ফলস্বরূপ,
শনিদেবের ক্রোধ আরও শক্তিশালী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভক্তকে হনুমানের পূজা করার
নির্দেশ দেওয়া হয়। শনিদেবের প্রকোপ এড়াতে চাইলে প্রতিদিন হনুমান চালিসা পাঠ
করুন। প্রতিদিন সম্ভব না হলে শনিবার পুজোর আগে হনুমান চালিশা পাঠ করুন,
![]() |
শনিদেব কে। Shani Dev প্রণাম মন্ত্র। শনির সাড়েসাতি |
শনিদেবের দশটি নাম রয়েছে এবং সেগুলি ১০৮ বার পুনরাবৃত্তি করে জপ করুন।
ভগবান শিব হলেন শনিদেবের গুরু। তাই শুধুমাত্র ওম নমঃ শিবায়
মন্ত্রটি পাঠ করে শনিদেবকে খুশি করতে পারেন। পুরাণ অনুসারে শনি অভিশাপ পেয়েছিলেন
যে তিনি যার দিকে তাকাবেন,
তারই সর্বনাশ হয়ে যাবে। শনির দৃষ্টিকে তাই সবাই ভয় পান। শনির দৃষ্টি এড়াতেই
ঘরে শনির মূর্তি রাখা হয় না। প্রতি শনিবার শনি মন্দিরের বাইরে সর্ষের তেলের প্রদীপ
জ্বালাতে বহু মানুষের ভিড় থাকলেও তাঁরা কেউ শনিকে ঘরে স্থান দেন না। মন্দিরে পুজো
দেওয়ার সময়ও শনির দিকে সরাসরি তাকাতে বারণ করা হয়। শনির মূর্তির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
তাঁর চোখের দিকে তাকানো মোটেও শুভ নয়। শনির পায়ের দিকে তাকিয়ে তাঁর পুজো করা উচিত।
কীভাবে শনিদেব আপনাকে ধনী করবে?
শনিদেবকে খুশি করতে হলে, প্রত্যেক শনিবার অশ্বথ্থ গাছের নিচে
সরষে তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালান। এর পরে সেই গাছটি কমপক্ষে ৩ বার পরিক্রমা করুন।
শনিদেবের তান্ত্রিক মন্ত্রকে ১০৮ বার যপ করতে হবে। এর পরে অসহায় কোনও মানুষকে পয়সা
দান করুন। মনে রাখতে হবে,
শনিকে খুশি করতে হলে সবার প্রথমে নিজের কাজ সঠিক ভাবে করা উচিত।
জ্যোতিষ মতে, শুধুমাত্র ভালো কাজ করেও যে কেউ
শনিদেবকে প্রসন্ন করতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে, শনিদেবের পুজোয় সামান্যতম ভুল করা
কিন্তু উচিত নয়। বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলি মাথায় রাখতে হবে। একটু ভুল হলেই
অপ্রসন্ন হতে পারে শনিদেব। শনিদেবের পুজোর সময়ে যে বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে। শনি
প্রতিমার সামনে শনিদেবের পুজোর করা উচিত নয়। যাঁরা পুজো করবেন, তাঁদের আচরণ
ও ব্যবহার ভালো হওয়া উচিত। ঈশ্বরে বিশ্বাস ভালো রাখা উচিত। মন এবং কাজ সুন্দর হলে, শনিদেব
তাঁকে কখনও কষ্ট দেন না। ফলে শনিদেবের পুজোর আগে অবশ্যই এই বিষয়গুলি মাথার রাখা
উচিত।
![]() |
শনিদেব কে। Shani Dev প্রণাম মন্ত্র। শনির সাড়েসাতি |
শনিদেবের হাত থেকে বাঁচার উপায় –
• বাড়িতে
অবশ্যই নীল অপরাজিতা ফুলের গাছ লাগানো উচিত।
• সকালে গুড় ও
রুটি কালো কুকুরকে খাওয়ালে শনির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
• ভাত রান্না
হওয়ার পরে, খাওয়ার
আগে যদি কাককে খাওয়ানো হয় তাহলে কিছু শুভ ফল হবেই।
• অন্তত আড়াই
বছর নীল পেন, নীল
রুমাল, নীল
জামা, এমনকি
বাড়ির পর্দাও নীল ব্যবহার করা দরকার।
• প্রতি
শনিবার দুপুরের খাদ্য অবশ্যই কালো পাথরের থালাতে বিউলির ডালের সঙ্গে গ্রহণ করলে
সাড়ে সাতির দোষ কাটে।
• প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে মুখ হাত ধুয়ে খালি পেটে পাঁচটা কালো তিল ভক্ষণ করলে খুব উপকার পাওয়া যায়।
0 মন্তব্যসমূহ