মনোবিজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ববিদ্যা | কাউন্সিলিং কি
মনোবিজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ববিদ্যা হল, মনের বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান মূলত মানুষের সাথে সম্পর্কিত, তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণ সম্পর্কিত বিদ্যা। Human Psychology- নিয়ে পড়াশোনা অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে অধ্যয়ন করা বেশ কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রকার কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে মানুষের মনের অথবা বলা বাহুল্য অবচেতন মনের গোপন কথা একজন মনোবিজ্ঞানী জানতে পারেন।
![]() |
মনোবিজ্ঞান কি । Human Psychology - নিয়ে পড়াশোনা |
মনোবিজ্ঞান বা সাইকোলজির প্রাণপুরুষ যাকে বলা হয়, তিনি হলেন ভিয়েনা শহরের শারীরবিজ্ঞানী ডঃ সিগমুন্ড
ফ্রয়েড। ফ্রয়েডের মন, অবচেতন মনের তত্ত্ব আর এ সম্পর্কে তাঁর
সম্পূর্ণ এক নতুন দিকের উন্মোচনই মানুষকে নতুন করে,নতুন ভাবে হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে ভাবতে শেখায়।হিউম্যান সাইকোলজির চর্চার
ক্ষেত্রে আরও নানা দিক খুলে যেতে শুরু করে।বাড়তে থাকে এ বিষয়ে মানুষের
আগ্রহও। বিভিন্ন কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে পড়ানো শুরু হতে
থাকে।সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা,গবেষণা বা কাজের
ক্ষেত্র কিন্তু আজকের দিনে প্রচুর।আজকের ব্যস্ত জটিল জীবনে মানুষের কাজের চাপ
বাড়ছে। ফলে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততাও।আর কাজের সময় যত বাড়ছে,তত কমছে নিজের সময়।বাড়ছে মানুষে মানুষে দূরত্ব।সম্পর্ক আর নানা ক্ষেত্রে আসছে
জটিলতা।
জেনে নিনঃ মানসিক ক্ষমতায়ণ, হতাশা থেকে মুক্ত হওয়ার উপায়, মন বল বৃদ্ধি করব কি করে?
কাউন্সেলিং কি?
জীবনের সকল অভিজ্ঞতা কি সুখের হয়? হয় না। কখনও আমরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়, দারুণ সময় পার করি। আবার কখনও ভীষণ খারাপ সময় যায়। সবকিছুই অর্থহীন মনে হয়। নিজের প্রতি থাকেনা কোন সন্মান, কমে যায় আত্মবিশ্বাস। জন্ম থেকে শুরু করে বেড়ে উঠা, লেখাপড়া, চাকরি-বাকরি, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে সবসময়-যে যেমনটা হওয়ার কথা তেমনটা হয়, তা কিন্তু নয়। মাঝে মাঝে এর ব্যত্যয় ঘটে। ফলে আমাদের মননে এবং আচরণে তৈরি হতে পারে তাঁর প্রতিক্রিয়া। এই প্রতিক্রিয়া অতি সামান্য থেকে জীবন শেষ করে দেয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারে। জীবন চলার পথটা হয়ে যেতে পারে অস্বচ্ছ বা কুয়াশাচ্ছন্ন। অবস্থাটা এমন দাঁড়ায় যে আমরা নিজেরা এর থেকে বের হতে পারি না। আমাদের সি-ড্রাইভ তথা ব্রেইন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তখনই প্রয়োজন সি-ড্রাইভ ক্লিনার। হ্যা, একজন প্রশিক্ষিত কাউন্সেলর আপনার সি-ড্রাইভ ক্লিনারের মতই কাজ করবে। মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং নেয়ার জন্য একজনকে মানসিক রোগী হতে হয় না। যেকোনো ব্যক্তি যেকোনো সময় কাউন্সেলিং নিতে পারে। এটি একটি পার্শ-প্রতিক্রিয়াহীন ইতিবাচক প্রক্রিয়া।
![]() |
মনোবিজ্ঞান কি । Human Psychology - নিয়ে পড়াশোনা |
![]() |
মনোবিজ্ঞান কি । Human Psychology - নিয়ে পড়াশোনা |
মানুষের মন যে রীতিমতো একটা জনপ্রিয় চর্চার বিষয় হবে,এতে আর সন্দেহ কি! বিভিন্ন হসপিটালে আর সাইকোলজিস্টের চেম্বারেও তাই ভিড় বাড়ছে
মানুষের। মনের অসুখের সমাধান সব্বাই চান। তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আপনি কিন্তু
হিউম্যান সাইকোলজিকে আপনার পড়াশোনা বা গবেষণা বা কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নিতেই
পারেন। স্কোপ এখানে প্রচুর। তাই এখানে রইলো আপনাদের জন্য কিছু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের
খবর যেখানে সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা হয়।
জেনে নিনঃ- মানসিক অবসাদ সম্পর্কে
Human Psychology - নিয়ে পড়াশোনা
১. আশুতোষ কলেজ
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ এই কলেজে আপনি সাইকোলজি নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।কলকাতার অন্যতম নাম করা কলেজ এটি।তাছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরও অনেক কলেজেই সাইকোলজি পড়ানো হয় স্নাতক স্তরে।
২. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পশ্চিমবঙ্গে যদি
সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান,তাহলে বেস্ট চান্স
কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।এখানকার ফ্যাকাল্টিও দারুণ। আর অ্যাপ্ল্যায়েড সাইকোলজি
নিয়ে পড়াশোনার সুযোগও কিন্তু এখানে মিলবে।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের
বাইরেও কিন্তু দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ, পুনের ফার্গুসন
কলেজ, বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ার সুযোগ
মিলবে। উচ্চশিক্ষা চাইলে অনায়াসেই করে ফেলতে পারেন। আর পড়ার জন্য বিদেশ?সে তো রইলোই। বাইরে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, লন্ডনের কিংস কলেজেও সাইকোলজি পড়ানো হয়।আর আমাদের দেশের থেকে বাইরে কিন্তু
সাইকোলজির চর্চার ক্ষেত্র অনেক বেশী। তাই সুযোগও বেশী।
আর যদি জানতে চান সাইকোলজি পড়ে কাজের সুযোগ কেমন? তাহলে আমি বলবো, সাইকোলজির চর্চা এবং এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহ কিন্তু দিন দিন বাড়ছে।কাউন্সেলিং-এর প্রতিও প্রবণতা বাড়ছে মানুষের।আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই কাউন্সেলিংকে মাস্ট করে দেওয়া হয়েছে।তাই কাজের সুযোগ বেশ আছেই।বিভিন্ন হসপিটালে সাইকোলজিস্টের কাজ তো করতেই পারেন।পেশেন্টের ট্রিটমেন্ট করতে পারেন।তাছাড়া আলাদা চেম্বার খুলেও প্র্যাকটিস করতে পারেন।
![]() |
মনোবিজ্ঞান কি । Human Psychology - নিয়ে পড়াশোনা |
মজার সাইকোলজি টিপস
Ø 👉কেউ আপনার সাথে কথা বলেই যাচ্ছে, থামার কোনো লক্ষণ নেই, অথচ আপনি আর তার কথা শুনতে চান না, তাহলে এক কাজ করুন, আপনার হাঁতে (কলম,পেন্সিল, চাবি) বা কাছে যা আছে তা মাটিতে ফেলে দিন, এরপর ঝুঁকে সেটিকে তুলে নিন, দেখবেন কিছুক্ষণের জন্য সেই ব্যক্তি থেমে
যাবে, এরপর সে আর আগের মত কথা বলার পরিস্থিতিতে
থাকবে না, তার কথা অনেকটা ছোট হয়ে যাবে। বিশ্বাস না
হলে আজই করে দেখুন।
Ø 👉বাজারে গেছেন, জিনিসপত্রের দর কষাকষি করছেন? এখানে আমরা বেশিরভাগ জনই বিশেষ ভুল করে ফেলি, আমরা সরাসরি দোকানদারকে বলে ফেলি, আরেকটু দাম কমান না। কিন্তু এখানেই আমরা ভুল করে বসি, আমরা এখানে একটি নেতিবাচক শব্দ ‘না’ ব্যবহার করে ফেলি, আর মানুষ এই শব্দ শুনতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নয়। যার ফলে দোকানী সরাসরি বলে দেয় ‘না আর কম করা যাবে না।‘ এর পরিবর্তে আপনি যদি বলেন- “আপনি আরেকটু কমাতে পাড়বেন।“ অথবা “আমি আশা করছি আপনি হয়ত আরেকটু কমাবেন।“ আর গলার স্বর হবে একটু কোমল। যার ফলে সেই দোকানীর মনে একটি ইতিবাচক সাড়া পড়বে। অর্থাৎ মুখে সবসময় পজিটিভ ভাব রাখার চেষ্টা করুন।
Ø 👉কেউ কথা বলার সময় সত্য বলছে কি না মিথ্যে তা যাচাই করার
জন্য, আপনাকে সেই বক্তার হাতের দিকে নজর দিতে হবে।
যদি দেখেন যে,
কথা বলার সময় সে তার হাত
অনেক নাড়াচ্ছে,
তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে, সে যা বলছে তা সত্য বা অনেকটাই সত্য। কিন্তু
যদি দেখেন সে হাত নাড়াচ্ছে না তাহলে আপনি ধরে নিতে পাড়েন যে সে যা বলছে তা
মিথ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
Ø 👉একজন মানুষ তখনই সবচেয়ে
বেশি আকর্ষণীয় লাগে যখন সে তার নিজের প্যাশন বা নিজের ভালো লাগার বিষয়ে বলতে
থাকে, আর কোনো মানুষের আসল সৌন্দর্য দেখার এটাই হল
শ্রেষ্ঠ সময়।
Ø 👉কেউ আপনার কাছে সাহায্য চাইলে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করুন। এরফলে সেই ব্যক্তি আপনার উপর ভরসা বাড়াবে, এবং পরবর্তীতে আপনাকেও সে সাহায্য করার রাস্তা খুজবে, যার ফলে আখেরে লাভ কিন্তু আপনারই। তবে স্থান-কাল-পাত্র বুঝেই সাহায্য করুন।
প্রঃ মনোবিজ্ঞান - এর জনক কে
উঃ ভিয়েনা শহরের শারীরবিজ্ঞানী ডঃ সিগমুন্ড ফ্রয়েড
প্রঃ মনোবিজ্ঞান কি
উঃ মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণ সম্পর্কিত বিদ্যা ও অধ্যয়ন। মনোবিজ্ঞান মূলত মানুষের সাথে সম্পর্কিত, তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়।
প্রঃ মনোবিজ্ঞান চিকিৎসা
উঃ বিভিন্ন প্রকারের সঠিক কাউন্সেলিং মাধ্যমেই চিকিৎসা সম্ভব।
প্রঃ মনোবিজ্ঞান সংক্রান্ত টিপস্
উঃ আমাদের সুখী হবার জন্য শুধু একটি জিনিসের প্রয়োজন !
আপনার আর্থিক অবস্থার কথা কাউকে বলবেন না ও নিজের ভবিষ্যৎ ও লক্ষ্যের কথা কাউকে না বলা।
যারা ভালো কোনো কিছুর জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে, দেখা যায় পরবর্তী কালে অধিক মাত্রায় সফল হয় তারাই !
শরীরচর্চা করুন। ব্যায়ামে দেহ-মন সুস্থতা পায়। মন ভালো থাকে। সুখ বোধ করবেন অনায়াসে।
আমরা ক্ষমতা পেলেই তার অপব্যবহার করি ! সেই ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করুণ।
প্রঃ মনোবিজ্ঞান হলো আচরণের বিজ্ঞান এটি কে বলেছেন
উঃ জে. বি. ওয়াটসন।
0 মন্তব্যসমূহ