Banner

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ

 

জল জঙ্গল পাহাড়ের অপূর্ব মিশ্রণে ঘেরা মুকুটমণিপুর

পর্যটকদের কাছে দিনে দিনে বেড়ানোর একটি অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা হয়ে উঠছে জল জঙ্গল পাহাড়ের অপূর্ব মিশ্রণে ঘেরা মুকুটমণিপুর। কলকাতা থেকে খুব কাছে দুদিন ছুটি কাটানোর অথবা পিকনিক স্পট হিসাবে ক্রমশই খ্যাতি লাভ করছে মুকুটমণিপুর। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য মুকুটমণিপুরকে অনেকেই রাঢ়বঙ্গের রানিবলেন। বাঁকুড়ার একেবারে দক্ষিণে কংসাবতী ও কুমারী নদী যেখানে মিলেছে, সেখানেই মুকুটমণিপুর জলাধার বা ড্যামজলাধারের চারদিকে সবুজে ঢাকা ছোট ছোট পাহাড় আর টিলা। একদিকে কংসাবতী নদী কুলুকুলু শব্দে বয়ে গিয়েছে, অন্যদিকে সারি দিয়ে মাথা উঁচিয়ে দাড়িয়ে আছে পাহাড়। কংসাবতী বাঁধের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখা মেলে সবুজ ঘেরা গ্রামঃ নির্জনতা উপভোগ করার আদর্শ স্থান মুকুটমণিপুর শহরের কোলাহল থেকে দূরে, ব্যস্ততা থেকে একটু ছুটি নিয়ে অবসর যাপন করতে হলে অবশ্যই মুকুটমণিপুর ভ্রমণ করা যায়।

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ
মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ 

সরকারি তথ্য অনুযায়ীবিধানচন্দ্র রায়ের আমলে নির্মিত ভারতের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎআর্থ ড্যাম' অর্থাৎ মাটির বাঁধ, যেটি "মুকুটের" ন্যায় টিলা দ্বারা বেষ্টিত, যার থেকে নামকরণ হয়েছে মুকুটমণিপুর। এটির দৈর্ঘ্যে প্রায় ১১ কিলোমিটার। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য এখানে এসে ধরা দিয়েছে এক অনন্য স্বাদে।

আরও পড়ুনঃ- মন্দারমণি ভ্রমণ


মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড

কী ভাবে যাবেন?


ট্রেনঃ- কলকাতা থেকে মুকুটমণিপুর প্রায় ২৩০ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে বাঁকুড়া বা পুরুলিয়াগামী ট্রেন ধরে বাঁকুড়া স্টেশনে নেমে গাড়ি ভাড়া করে মুকুটমণিপুর যাওয়া যায়।

বাসঃ- দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহও সংস্থার বাস ধরেও সরাসরি কলকাতা থেকে মুকুটমণিপুর যাওয়া যায়।

প্রাইভেট গাড়ী/বাসঃ- এ ছাড়া, কলকাতা থেকে গাড়ি বা বাসে চড়ে আসানসোল, দুর্গাপুর কিংবা পানাগড় হয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় মুকুটমণিপুরে।

 

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ
মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ 

আরও পড়ুনঃ- তিনচুলে ভ্রমণ

দর্শনীয় স্থান

১) জলাধারে নৌকবিহার- মুকুটমণিপুরের প্রধান ও মূল আকর্ষণ হল মুকুটমণিপুর ড্যাম আর তার উপর নৌক বিহার না করলে তো মুকুটমণিপুর ভ্রমণ অপূর্ণই থেকে যাবে। চাইলে নৌক করে মোহনা পর্যন্ত ঘুরে আসা যায়।

২) মুসাফিরানা ভিউ পয়েন্ট- কংসাবতী বাঁধ থেকে বেরতেই প্রথমে চোখে পড়ে মুসাফিরানা ভিউ পয়েন্ট। সুন্দর করে সাজানো একটি টিলা যার উপর থেকে মুকুটমণিপুরের অসাধারণ রূপ দেখা যায়। মুসাফিরানার দেয়ালে আঁকা আছে বাঁকুড়ার সমস্ত দ্রষ্টব্য জায়গার ছবি।

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ
মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ 


৩) পরেশনাথ মন্দিরছোট টিলার উপরে অবস্থিত পরেশনাথ শিবমন্দির। বেশ কয়েকটি সিঁড়ি ভেঙে এই মন্দিরে উঠতে হয়। পাহাড়ের উপর থেকে প্রকৃতিক দৃশ্য সত্যিই খুব নয়নাভিরাম। কথিত আছে, এক সময়ে বাঁকুড়ায় জৈন ধর্মের প্রভাব ছিল। আর জৈন ধর্মাবলম্বী মানুষদের তীর্থস্থান ছিল এই পরেশনাথ পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরে জৈন তীর্থঙ্করদের একাধিক মূর্তি সেই ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়। 

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ
মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ 


আরও পড়ুনঃ পুরী ভ্রমণ


৪) বনপুকুরিয়া ডিয়ার পার্ক- মুকুটমণিপুর থেকে মাত্র ২কিমি দূরে নৌক ভাড়া করে যাওয়ার পর রিক্সা করে এই ডিয়ার পার্কে পৌছানো যায়।

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ
মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ 

৫) অম্বিকানগর- জৈন তীর্থযাত্রীদের পীঠস্থান ছিল এই গ্রাম। এখনো এখানে প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। এখানে ঘাস ও বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় নানা রকম হস্তশিল্পের জিনিস এখানে আছে ভগ্নপ্রায় এখানে রাজবাড়ীতে মায়ের মন্দির আরতী দেখতে আসা যেতে পারে।

৬) পোড়া পাহাড় (আদিম গুহা)- মুকুটমণিপুরের সীমান্ত পেরিয়ে, বাঁকুড়ার খাতরা অঞ্চলে পাহাড়ের উপর রয়েছে এই গুহাটি। ভাড়া টোটো করে ঘুরে আসা যায়। তবে পাহাড়ে উঠতে হবে পায়ে হেঁটেই, সময় বিকেল ৪টে পর্যন্ত।

 আরও পড়ুনঃ ডুয়ার্স ভ্রমণ 

মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ
মুকুটমণিপুর ভ্রমণ গাইড । Mukutmanipur Trip | মুকুটমণিপুর বাঁধ 



কোথায় থাকবেন?

রাত্রিবাসের জন্য মুকুটমণিপুর জলাধারের কাছেই সরকারি ও বেসরকারি একাধিক আবাসস্থল রয়েছে। ভাড়া দেড় হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। আগে থেকে বুক করে যাওয়াই ভাল। এখন অধিকাংশ হোটেল অনলাইনে বুক করা যায়। কিছু বেসরকারি হোটেলে তাঁবুতেও রাত্রিবাসের সুযোগ রয়েছে। এখানে হোটেল থাকার সাথে সাথে খাবারের ও সুব্যবস্থা আছে।  


 ইউটিউবে মুকুটমণিপুর ভ্রমণ দেখতে ক্লিক করুণ 


                                    null


সব মিলিয়ে পাহাড়, নদী আর সবুজের সমাহারে নয়নাভিরাম স্থান মুকুটমণিপুর। কোলকাতা থেকে খুব কাছে পরিবার প্রিয়জন বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে স্বপ্লদিনে ছুটি কাটানোর আর্দশ স্থান হয়ে উঠেছে মুকুটমণিপুর।  

 FAQ:-


প্রঃ মুকুটমণিপুর বাঁধ কোন নদীতে?

উঃ কংসাবতী ও কুমারী নদী-র উপর গড়ে তোলা হয়েছে মুকুটমণিপুরের বাঁধটি।


প্রঃ বিষ্ণুপুর থেকে মুকুটমণিপুরের দূরত্ব কত?

উঃ বিষ্ণুপুর থেকে মুকুটমণিপুরের দূরত্ব প্রায় ৮২ কি.মি.


প্রঃ  মুকুটমণিপুর কোন জেলায় অবস্থিত?

উঃ মুকুটমণিপুর বাঁকুড়া জেলার খাতরা মহকুমায় অবস্থিত।


প্রঃ মুকুটমণিপুর কি জন্য বিখ্যাত?

উঃ ভারতের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ‘আর্থ ড্যামঅর্থাৎ মাটির বাঁধ, যেটি "মুকুটের" ন্যায় টিলা দ্বারা বেষ্টিত, যার থেকে নামকরণ হয়েছে মুকুটমণিপুর। এটির দৈর্ঘ্যে প্রায় ১১ কিলোমিটার। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য এখানে এসে ধরা দিয়েছে এক অনন্য স্বাদে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ